প্রাসঙ্গিগ আল-কুরআনুল করীম এর সূরাঃ আর রুম, কিছু আয়াত পেশ করা হল
পুরো সুরাটি পড়তে Bangla Quran
৯৬:১১
তুমি কি মনে কর, যদি সে সৎপথে থাকে। [১]
[১] অর্থাৎ, যাকে নামায পড়া হতে বাধা দেওয়া হচ্ছে সে হিদায়াতপ্রাপ্ত।
৯৬:১২
অথবা তাকওয়া (আল্লাহভীতি)র নির্দেশ দেয়। [১]
[১] অর্থাৎ, ইখলাস, তাওহীদ এবং নেক আমলের শিক্ষা দেয়; যাতে মানুষ জাহান্নাম থেকে পরিত্রাণ পেতে পারে। তাহলে এই (নামায পড়া এবং তাকওয়া বা আল্লাহভীতির নির্দেশ দেওয়ার) কাজ কি এমন আচরণ যার বিরোধিতা করা হবে এবং তার জন্য হুমকি ও ধমকি দেওয়া হবে?
৯৬:১৩
তুমি লক্ষ্য করেছ কি, যদি সে মিথ্যা মনে করে ও মুখ ফিরিয়ে নেয়? [১]
[১] অর্থাৎ, আবু জাহল আল্লাহর পয়গম্বরকে মিথ্যা ভাবে এবং ঈমান থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়।
এখানে أرَأيتَ (তুমি লক্ষ্য করেছ কি)-এর মানে أَخبِرنِي (আমাকে বল।)
৯৬:১৪
তবে কি সে অবগত নয় যে, আল্লাহ (তার সবকিছু) দেখছেন? [১]
[১] এর মতলব হল যে, এই ব্যক্তি (আবু জাহল) যে এইরূপ আচরণ করছে সে কি জানে না যে, আল্লাহ তাআলা সবকিছু দেখছেন? এবং তিনি তাকে এর প্রতিফল ভোগাবেন। অর্থাৎ, أَلَم تَعلَم হল পূর্বে উল্লিখিত إن كَانَ علَى الهُدَى، إن كَذَّبَ وتَوَلَّى শর্ত বাক্যের পরিপূরক।
৯৬:১৫
সাবধান! সে যদি নিবৃত্ত না হয় তাহলে আমি (তাকে) অবশ্যই টেনে-হেঁচড়ে নিয়ে যাব, মাথার সামনের চুলের ঝুঁটি ধরে। [১]
[১] অর্থাৎ, নবী (সাঃ)-এর বিরুদ্ধাচরণ ও দুশমনী করা হতে এবং তাঁকে নামায পড়া থেকে বাধা দেওয়া হতে বিরত না হয়, তাহলে আমি তার কপালে উপরিভাগের কেশগুচ্ছ ধরে টান দেব। হাদীসে বর্ণিত যে, একদা আবু জাহল বলেছিল যে, ‘যদি মুহাম্মাদ কা’বার নিকট নামায পড়া হতে বিরত না হয়, তাহলে আমি তার গর্দানে পা রেখে দেব।’ অর্থাৎ, তাকে পদদলিত করব এবং দস্তরমত লাঞ্ছিত করব। নবী (সাঃ) এর কানে এ কথা পৌঁছলে তিনি বললেন, “যদি সে তা করত, তাহলে ফিরিশতা তাকে ধরে ফেলতেন।” (সহীহ বুখারী তাফসীর সূরা আলাক ৯৬ পরিচ্ছেদ।)
ইসলাম ও মুসলমানদের চরম শত্রু ছিল আবু জাহল। তার মূল নাম আমর ইবনে হিশাম। জাহেলী যুগে তার উপাধি ছিল আবুল হাকাম। অর্থাৎ জ্ঞানের পিতা। তার আচরণের কারণে রাসূলুল্লাহ (সঃ) তার নাম রাখেন আবু জাহল অর্থাৎ মূর্খের পিতা।
আবু হুরায়রা (রাঃ) হ’তে বর্ণিত, কুরায়েশ সরদারদের নিকটে একদিন আবু জাহল বলল, মুহাম্মাদ আপনাদের সামনে নিজের চেহারায় ধূলো লাগিয়ে রাখে কি? কুরায়েশদের সরদাররা বলল, হ্যাঁ। আবু জাহল বলল, লাত ও ওয্যার শপথ! আমি যদি তাঁকে এ অবস্থায় দেখি, তবে তাঁর ঘাড় ভেঙ্গে দেব, তাঁর চেহারা মাটিতে হেঁচড়াব। এরপর রাসূল (সঃ)-কে ছালাত আদায় করতে দেখে তাঁর ঘাড় মটকে দেয়ার জন্য সে অগ্রসর হ’ল। কিন্তু সকলে অবাক হয়ে দেখল যে, আবু জাহল চিৎপটাং হয়ে মাটিতে গড়াগড়ি করছে এবং চিৎকার করে বলছে বাঁচাও বাঁচাও। তার পরিচিত লোকেরা জিজ্ঞেস করল, আবুল হাকাম তোমার কি হয়েছে? সে বলল, আমি দেখলাম, আমার ও মুহাম্মাদের মধ্যখানে আগুনের একটি পরিখা। ভয়াবহ সে আগুনের পরিখায় দাউ দাউ করে আগুন জ্বলছে। রাসূল (সঃ) এ কথা শুনে বললেন, যদি সে আমার কাছে আসত, তবে ফেরেশতা তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ছিড়ে ফেলত’।[১৭]
একবার আবু জাহল বলল, হে কুরায়েশ ভাইয়েরা! তোমরা লক্ষ্য করেছ কি, মুহাম্মাদ আমাদের ধর্মের সমালোচনা ও উপাস্যদের নিন্দা থেকে বিরত হচ্ছে না? আমাদের পিতা ও পিতামহকে সারাক্ষণ গালমন্দ করেই চলেছে। এ কারণে আমি আল্লাহর নামে প্রতিজ্ঞা করেছি যে, আমি একটি ভারী পাথর নিয়ে বসে থাকব, মুহাম্মাদ যখন সিজদায় যাবে, তখন সে পাথর দিয়ে তাঁর মাথা চূর্ণ-বিচূর্ণ করে দিব। এরপর যে কোন পরিস্থিতির জন্য আমি প্রস্ত্তত। ইচ্ছে হ’লে তোমরা আমাকে বান্ধবহীন অবস্থায় রাখবে, ইচ্ছে হ’লে আমার নিরাপত্তার ব্যবস্থা করবে। এরপর আবদে মানাফ আমার সাথে যেরূপ ইচ্ছে ব্যবহার করবে এতে আমার কোন পরোয়া নেই। কুরায়েশরা প্রস্তাব শুনার পর বলল, কোন্ ব্যাপারে আমরা তোমাকে বান্ধবহীন অবস্থায় ফেলে রেখেছি? তোমাকে পূর্ণাঙ্গ নিরাপত্তা দেওয়া হবে। তুমি যা করতে চাও করতে পার। সকালে আবু জাহল একটি ভারী পাথর নিয়ে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর অপেক্ষায় বসে থাকল। কুরায়েশরা একে একে সমবেত হয়ে আবু জাহলের তৎপরতা দেখার জন্য উৎকণ্ঠিত হয়ে রইল। রাসূল (সঃ) যথারীতি হাযির হয়ে ছালাত আদায় করতে শুরু করলেন। তিনি যখন সিজদায় গেলেন, তখন আবু জাহল পাথর নিয়ে অগ্রসর হ’ল। কিন্তু পরক্ষণে ভীত-সন্ত্রস্ত অবস্থায় ফিরে এলো। তার হাত যেন পাথরের সাথে আটকে রইল। কুরায়েশদের কয়েকজন লোক তার কাছে এসে বলল, আবুল হাকাম! তোমার কি হয়েছে? সে বলল, আমি যে কথা রাতে বলেছিলাম, তা করতে যাচ্ছিলাম। কিন্তু পৌঁছাতেই দেখতে পেলাম, মুহাম্মাদ এবং আমার মাঝখানে একটা উট এসে দাঁড়িয়েছে। আল্লাহর কসম! অত বড় লম্বা ঘাঁড় ও দাঁতবিশিষ্ট উট আমি কখনো দেখিনি। উটটি আমাকে হামলা করতে অগ্রসর হচ্ছিল। এ ব্যাপারে রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, উটের ছদ্মবেশে ছিলেন জিবরীল (আঃ)। আবু জাহল যদি কাছে আসত, তবে তাকে পাকড়াও করা হ’ত।[১৮] আবু জাহল একদিন ছাফা পাহাড়ের কাছাকাছি জায়গায় রাসূলুল্লাহ (সঃ)-কে গালমন্দ করে ও শাসিয়ে দেয়। রাসূল (সঃ) নীরব রইলেন, কোন কথা বললেন না। এরপর আবু জাহল নবী করীম (সঃ)-এর মাথায় এক টুকরো পাথর নিক্ষেপ করল। এতে তাঁর মাথা ফেটে রক্ত বের হ’ল। এরপর আবু জাহল কা‘বার সামনে কুরায়েশদের মজলিসে গিয়ে বসল। আব্দুল্লাহ ইবনে জুদয়ানের একজন দাসী এ দৃশ্য প্রত্যক্ষ করল। ইতিমধ্যে হামযাহ শিকার করে ফিরছিলেন। সেই দাসী তাকে ঘটনা শুনালেন। হামযাহ ঘটনা শুনে ক্রোধে অস্থির হয়ে উঠলেন। তিনি ছিলেন কুরায়েশদের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী যুবক। তিনি দেরী না করে সামনে এগিয়ে গিয়ে বললেন, আবু জাহলকে যেখানে পাব সেখানেই আঘাত করব। এরপর তিনি সোজা কা‘বা ঘরে আবু জাহলের সামনে গিয়ে বললেন, ওরে গুহ্যদ্বার দিয়ে বায়ু ত্যাগকারী! তুই আমার ভাতিজাকে গালি দিয়েছিস, অথচ আমিও তাঁর প্রচারিত দ্বীনের অনুসারী?[১৯] এ কথা বলে হাতের ধনুক দিয়ে আবু জাহলের মাথায় এত জোরে আঘাত করলেন যে, মাথায় বড় ধরনের জখম হয়ে গেল। এ ঘটনার সাথে সাথে আবু জাহলের গোত্র বনু মাখযূম এবং হামযাহ (রাঃ)-এর গোত্র বনু হাশেমের লোকেরা পরস্পরের বিরুদ্ধে খড়গহস্ত হয়ে উঠলো। আবু জাহল সকলকে এই বলে থামিয়ে দিল যে, আবু আমরকে কিছু বল না, আমি তার ভাতিজাকে আসলেই খুব খারাপ ভাষায় গালি দিয়েছিলাম।[২০]
ইয়াসির বনু মাখযূমের ক্রীতদাস ছিলেন। তিনি এবং তাঁর স্ত্রী ও পুত্র মুসলমান হন। ফলে তাঁদের উপরে যে ধরনের অমানুষিক নির্যাতন করা হয়েছিল, তা অবর্ণনীয়। আবু জাহলের নির্দেশে বনু মাখযূমের এই ক্রীতদাস মুসলিম পরিবারের উপরে নৃশংসতম শাস্তি নেমে আসে। তাদেরকে খোলা ময়দানে নিয়ে উত্তপ্ত বালুকার উপরে ফেলে রেখে নানাভাবে নির্যাতন করা হ’ত। একদিন চলার পথে তাদের এই শাস্তির দৃশ্য দেখে রাসূলুল্লাহ (সঃ) তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘ধৈর্য ধর হে ইয়াসির পরিবার! তোমাদের ঠিকানা হ’ল জান্নাত’। ইয়াসিরের দুই পায়ে দু’টি রশি বেঁধে দু’দিকে দু’টি উটের পায়ে উক্ত রশির অন্য প্রান্ত বেঁধে দিয়ে উট দু’টিকে দু’দিকে জোরে হাঁকিয়ে নেওয়া হয়। তাতে জোরে হেঁচকা টানে ইয়াসিরের দেহ দ্বিখন্ডিত হয়ে যায় এবং সেখানেই তিনি শাহাদতবরণ করেন।[২১] অতঃপর পাষাণ হৃদয় আবু জাহল নিজ হাতে ইয়াসিরের স্ত্রী সুমাইয়ার গুপ্তাঙ্গে বর্শা বিদ্ধ করে তাকে হত্যা করে। তিনিই ছিলেন ইসলামের প্রথম মহিলা শহীদ। অতঃপর তাদের একমাত্র পুত্র আম্মারের উপরে শুরু হয় অবর্ণনীয় নির্যাতনের পালা। তাকে উত্তপ্ত কংকরময় বালুর উপরে হাত, পা বেঁধে পাথর চাপা দিয়ে ফেলে রেখে নির্যাতন করা হয়। একদিন আম্মারকে পানিতে চুবিয়ে আধামরা অবস্থায় উঠিয়ে বলা হ’ল, তুমি যতক্ষণ মুহাম্মাদকে গালি না দিবে এবং লাত, মানাত ও উযযা দেব-দেবীর প্রশংসা না করবে, ততক্ষণ তোমাকে মুক্তি দেওয়া হবে না। অবশেষে বাধ্য হয়ে তিনি তাদের কথা মেনে নেন। পরেই তিনি রাসূল (ছাঃ)-এর দরবারে গিয়ে কান্না-জড়িত কণ্ঠে সব ঘটনা খুলে বললেন ও আল্লাহর নিকটে ক্ষমা প্রার্থনা করলেন। তখন নিম্নোক্ত আয়াত নাযিল হয়- ‘ঈমান আনার পরে যে ব্যক্তি আল্লাহর সাথে কুফরী করে তাদের জন্য রয়েছে আল্লাহর ক্রোধ এবং কঠিন শাস্তি। কিন্তু যাকে বাধ্য করা হয়, অথচ তার অন্তর বিশ্বাসে অটল থাকে (তার জন্য কোন চিন্তা নেই)’ (নাহল ১৬/১০৬)। পরে আবুবকর (রাঃ) আম্মার বিন ইয়াসিরকে তার মনিবের কাছ থেকে খরিদ করে নিয়ে মুক্ত করে দেন। আম্মার ঐ সময় আবুবকর (রাঃ)-এর প্রশংসায় যে কবিতা বলেন, তার শুরু ছিল নিম্নরূপ : ‘আল্লাহ উত্তম পুরস্কার দান করুন আবুবকর (রাঃ)-কে বেলাল ও তার সাথীদের পক্ষ হ’তে এবং লাঞ্ছিত করুন আবু ফাকীহাহ ও আবু জাহলকে’।[২২]
রাসূল (সঃ) ও তাঁর সাথীদের বিভিন্নভাবে অত্যাচার করার পরিণাম বদর প্রান্তরে এমন ভয়াবহ হবে আবু জাহল তা ভাবতে পারেনি। দুর্বৃত্ত নেতার চারিদিকে ছিল তীর ও তলোয়ার বাহিনীর পাহারা। মুসলিম মুজাহিদের প্রচন্ড হামলায় সেই পাহারা ছিন্নভিন্ন হয়ে গেল। মুসলমানরা লক্ষ্য করলেন যে, আবু জাহল একটি ঘোড়ার পিঠে আরোহী। তার মৃত্যু তখন পায়ে পায়ে এগিয়ে আসছিল। আব্দুর রহমান ইবনে আওফ (রাঃ) বলেন, বদর যুদ্ধের দিনে আমি মুসলমানদের কাতারের মধ্যে ছিলাম। হঠাৎ লক্ষ্য করে দেখি আমার ডানে ও বামে দু’জন আনছার কিশোর। তাদের উপস্থিতি সম্পর্কে আমি চিন্তা করছিলাম। হঠাৎ একজন চুপিসারে বলল, চাচাজান আবু জাহল কে? আমাকে দেখিয়ে দিন। আমি বললাম, তুমি তার কি করবে? সে বলল, আমি শুনেছি সে নবী করীম (সঃ)-কে গালি দিয়ে কষ্ট দেয়। সেই সত্তার শপথ! যার হাতে আমার প্রাণ, যতক্ষণ পর্যন্ত আমার জীবন থাকে ততক্ষণ আমি তার সাথে লড়াই করে যাব। বর্নণাকারী (আব্দুর রহমান বিন আওফ) একথা শুনে হতভম্ব হয়ে গেলেন। অন্য আনছার কিশোরও চুপিসারে একই কথা বলল। কয়েক মহূর্ত পরে আমি আবু জাহলকে লোকদের মাঝে বিচরণ করতে দেখলাম। আমি আনছার কিশোরদ্বয়কে বললাম, ঐ দেখো তোমাদের শিকার। এ কথা শুনামাত্র উভয়ে আবু জাহলের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ল এবং শেষ পর্যন্ত তাকে হত্যা করে ফেলল। এরপর তারা নবী করীম (সঃ)-এর নিকটে এসে উপস্থিত হ’ল। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) জিজ্ঞেস করলেন, তোমাদের মধ্যে কে আবু জাহলকে হত্যা করেছ? উভয়ে বলল, আমি হত্যা করেছি। তিনি (সঃ) বললেন, তোমরা কি তলোয়ারের রক্ত মুছে ফেলেছ? তারা বলল, না। নবী করীম (সঃ) তাদের তলোয়ার দেখে বললেন, তোমরা উভয়েই হত্যা করেছ। রাসূলুল্লাহ (সঃ) আবু জাহলের পরিত্যক্ত জিনিসপত্র মু‘আয ইবনে আমর ইবনে জামূহকে প্রদান করলেন। তাদের একজনের নাম ছিল মু‘আয ইবনে আমর ইবনে জামূহ ও অপরজনের নাম মু‘আবিবয ইবনে আফরা।[২৩] এরপর নবী করীম (সঃ) বললেন, চলো আমাকে তার লাশ দেখাও। আমরা রাসূল (ছাঃ)-কে আবু জাহলের লাশের নিকটে নিয়ে গেলাম। তিনি বললেন, এ হচ্ছে এই উম্মাতের ফেরাঊন।[২৪] রাসূলুল্লাহ (সঃ) আবু জাহল, ওতবা ইবনে রাবী‘আ, শায়বা ইবনে রাবী‘আ, ওয়ালীদ ইবনে ওতবা, উমাইয়া ইবনে খালাফ এবং উকবা ইবনে আবু মুঈত্বসহ অন্যান্য কাফেরের নাম ধরে ধরে বদদো‘আ করেছিলেন।
আব্দুল্লাহ ইবনে মাস‘ঊদ (রাঃ) বলেন, একদিন রাসূল (সঃ) বায়তুল্লাহর পাশে ছালাত আদায় করছিলেন। আবু জাহল ও তার সাথীরা অদূরে বসেছিল। কিছুক্ষণ পর তার নির্দেশে ভুঁড়ি এনে সিজদারত রাসূলের দুই কাঁধের মাঝখানে চাপিয়ে দিল, যাতে ঐ বিরাট ভুড়ির চাপে ও দুর্গন্ধে দম বন্ধ হয়ে তিনি মারা যান। ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) বলেন, আমি সব দেখছিলাম। কিন্তু এই অবস্থায় আমার কিছুই করার ক্ষমতা ছিল না। অন্যদিকে শত্রুরা দানবীয় উল্লাসে ফেটে পড়ছিল। এই সময় কিভাবে এই দুঃসংবাদ ফাতেমার কানে পৌঁছল। তিনি দৌঁড়ে এসে ভুঁড়িটি সরিয়ে দিয়ে পিতাকে কষ্টকর অবস্থা থেকে রক্ষা করেন। অতঃপর রাসূলুল্লাহ (সঃ) মাথা উঁচু করে তিনবার বলেন, ‘হে আল্লাহ! তুমি কুরায়েশকে ধরো (তিনবার)! হে আল্লাহ! তুমি আমর ইবনে হিশাম অর্থাৎ আবু জাহলকে ধরো। হে আল্লাহ! তুমি উৎবা ও শায়বাহ বিন রাবী‘আহ, ওয়ালীদ বিন উৎবা, উমাইয়া বিন খালাফ, ওক্ববা বিন আবী মু‘ঈত্ব এবং ওমারাহ বিন অলীদকে ধরো’। ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) বলেন, আমি তাদের (উক্ত ৭ জনের) সবাইকে বদর যুদ্ধে নিহত হয়ে কূয়ায় নিক্ষিপ্ত অবস্থায় দেখেছি’।[২৫]
কুরআনের গল্পগুলি দ্বারা অনুপ্রাণিত হন, আল্লাহ্ সাথে আপনার সংযোগক শক্তিশালী করুন। কঠিন পরিস্থিতি সুন্দরভাবে পরিচালনা করার জন্য মনকে বিকশিত করুন।
ফেসবুকে যারা মন্তব্য করেছেনঃ
(Visited 137 times, 1 visits today)