মুসলিম বিশ্ব আজ দলে উপদলে বিভক্ত হয়ে নিজেদের মনগড়া বানানো পথে চলছে। কুরআন ও রাসূলুল্লাহ (সা) এর হাদীসকে ভাগ করে এক একটি দলের জন্যে এক একটি নিয়ে কিছু মেনে কিছু পরিত্যাগ করে নিজেদের মতো করে চলছে। আর প্রত্যেকটি দলই দাবী করে তারা হাক্বের উপর প্রতিষ্ঠিত। অথচ আল্লাহ, রাসূল(সা), কুরআন, ঈমান ইত্যাদি সম্পর্কে ঐ সকল দলের আক্বীদাও ভুলে পরিপূর্ণ।
পরকালে মু্ক্তি পেতে হলে অবশ্যই ‘আক্বীদাহ্ বিশুদ্ধ হতে হবে। কারণ আল্লাহ তা’আলা নূহ (আ) থেকে শেষ নাবী ও রাসূর মুহাম্মাদ (স) পর্যন্ত যত নাবী ও রাসূল প্রেরণ করেছেন সকলকেই তাদের উম্মাতদের ‘আক্বীদাহ বিশুদ্ধ করার জন্য প্রেয়ণ করেছেন। যেমন- আল্লাহ বলেন:
আমি প্রত্যেক উম্মাতদের নিকট তাদের নাবী-রাসূলদেরকে এ দাওয়াত নিয়ে প্রেরণ করেছি যে, তোমরা এক আল্লাহর ‘ইবাদাত করবে এবং তাগুত থেকে বেঁচে থাকবে” (সুরা নাহল- ১৬:৩৬)
তাই ‘আক্বীদার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের বাংলাদেশে চারটি মাযহাব বা দল খুবই পরিচিত। এ সকল মাযহাবের সর্বস্তরের লোকদের আল্লাহ, রাসূল (সা) কুরআন, ঈমান ইত্যাদি সম্পর্কে তাদের ‘আক্কীদাহ ভুলে পরিপূর্ণ। তা সত্বেও তারা তাদের ‘আক্বীদাহকে বিশুদ্ধ বলে দাবী করে। তারা বলে থাকে আমরা অমুক মাযহাবের লোক, অথচ সে মাযহাবের ইমামের ‘আক্বীদাহ বা বিশ্বাস কি ছিল তা তারা খতিয়ে দেখার প্রয়োজন বলে মনেও করে না। তারা দেখেনা রাসূল (সা) সাহাবা গণ, তাবেয়ীগণ, তাবে তাবেয়ীগণ অর্থ্যাৎ – সালাফগনদের আক্বীদাহ কী ছিল?
চার ইমাম যেমন- ইমাম আবূ হানিফাহ (র), ইমাম মালিক (র), ইমাম শাফিয়ী (র), ইমাম আহমাদ বিন হাম্বল (র), এদের সকলেরই আক্বীদাহ বিশুদ্ধ ছিল। তাদের আক্বীদাহ ছিল কুরআন ও সহীহ হাদীস অনুযায়ি ‘আক্বীদাহ। তাদের আক্বীদাহ ছিল রাসূল (সা) এবং তার সাহাবা কিরামদের ‘আক্বীদাহ্। অর্থাৎ তাদের সকলেরই ‘আক্বীদাহ ছিল এক। কিন্তু আমরা সেদিকে কর্ণপাত না করে, মাযহাবের দোহাই দিয়ে নিজেদের খেয়াল খুশি মতো চলছি। যা একজন সত্যিকারের মুসলমানের উচিৎ নয়।
চার মাযহাব সম্পর্কে জানতে হলে চারজন ইমাম সম্পর্কে জানা দরকার।
চার ইমামের সংক্ষিপ্ত জীবনী
ইমাম আবু হানিফা (রা) নাম নুমান বিন ছাবিত। উপনাম আবু হানিফা। রাসূল (সা) –এর ইন্তেকালের ৭০ বছর পর ৮০ হিজরীতে ইরাকের কুফায় জন্ম গ্রহণ করেন। ১৫০ হিজরীতে ৭০ বছর বয়সে বাগদাদে ইন্তেকাল করেন। তিনি তর্ক ও ফিকাহ শাস্ত্রে গভীর জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন। তিনি উচ্চ মানের একজন পরহেজগার ছিলেন। ইমামের কোন প্রামাণ্য লেখা বর্তমানে নেই।
ইমাম মালিক (রা) নাম মালিক বিন আনাস। রাসূল (সা) এর ইন্তেকালের ৮৩ বছর পর ৯৩ হিজরীতে পবিত্র মাদীনাতে জন্ম গ্রহণ করেন। ১৭৯ হিজরীতে ৮৬ বছর বয়সে মদীনাতেই ইন্তেকাল করেন। তিনি হাদীস ও ফিকাহ শাস্ত্রে গভীর জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন। তিনিই সর্বপ্রথম হাদীসের ইল্লেখযোগ্য কিতাব লিখেছেন। এটি ‘মুয়াত্বা মালিক” নামে প্রসিদ্ধ। এছাড়া আরও বহু কিতাব তিনি লিখেছেন।
ইমাম শাফিয়ী (রা) নাম মুহাম্মদ বিন ইদ্রিস আশ-শাফেয়ী। রাসূল (সা) এর ইন্তেকালের ১৪০ বছর পর ১৫০ হিজরীতে গাযায় জন্ম গ্রহণ করেন। পবিত্র মক্কায় বড় হন এবং জ্ঞান অর্জন করেন। ২০৪ হিজরীতে ৫৪ বছর বয়সে মিশরে ইন্তেকাল করেন। তিনি উচ্চ মানের একজন হাদীস বিশারদ ছিলেন। তিনি মহামূল্যবান বহুগ্রন্থ লিখেছেন। এসবের মধ্যে ‘কিতাবুল উম্ম’ ও ‘আর-রিসালাহ’ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
ইমাম আহমদ (রা) নাম আহমদ বিন মুহাম্মদ বিন হাম্বল। রাসূল (সা)-এর ইন্তেকালের ১৫৪ বছর পর ১৬৪ হিজরীতে বাগদাদে জন্মগ্রহণ করেন। ২৪১ হিজরীতে ৭৭ বছর বয়সে বাগদাদে ইন্তেকাল করেন।
তিনি হাদীস জগতে এক উজ্জল নক্ষত্র। হাদীসের এক বিশাল সমুদ্র। তিনি তাঁর সু-প্রসিদ্ধ কিতাব “আল মুসনাদ” এ চল্লিশ হাজার হাদীস মুসলিম বিশ্বকে উপহার দিয়ে গেছেন। এছাড়া আরও বহু গ্রন্থ তিনি লিখেছেন। গ্রন্থ রচনা ও হাদীসের জ্ঞানের ক্ষেত্রে চার ইমামের মধ্যে তিনিই সবার সেরা। বিস্তারিত দেখুন বই- চার ইমামের অবস্থান ।
পবিত্র কুরআন এবং সহীহ হাদীস অনুসারণ করাই চার ইমামের মূলনীতি। এই ব্যাপারে সন্মানিত চার ইমামের বক্তব্য তুলে ধরা হলো
ইমাম আবূ হানীফা (র) বলেছেন: যখন কোন (বিষয়ে) সহীহ হাদীস পাওয়া যাবে সেই সহীহ হাদীসকে আমার মাযহাব বলে জানবে।
তিনি আরও বলেছেন: আমি যদি এমন কথা বলি যা আল্লাহ তায়ালার কিতাব এবং রাসূল (স) –এর হাদীসের বিপরীত, তাহলে আমার কথাকে বর্জন কর (এবং কোরআন-হাদীসকে আঁকড়ে ধর)
তিনি আরও বলেছেন: সাবধান! তোমরা আল্লাহর দ্বীনে নিজেদের অভিমত প্রয়োগ করা হতে বিরত থাক। সকল অবস্থায়ই সুন্নাহর অনুসরণ কর। যে ব্যক্তি সুন্নাহ হতে বের হবে সে পথভ্রষ্ট হয়ে যাবে।
২. ইমাম মালিক (রা) বলেছেন: আমি একজন মানুষ মাত্র। চিন্তা গবেষণায় ভুলও হয় আবার সঠিকও হয়। সুতরাং আমার যে অভিমত কুরআন ও সুন্নাহর অনুকূলে পাও তা গ্রহণ কর। আর যা অনুকূলে নেই তা বর্জন কর।
৩. ইমাম শাফিয়ী (র) বলেছেন: তোমাদের কারো কাছ থেকে যেন রাসূলুল্লাহ (সা) এর সুন্নাহ ছুটে না যায়। আমি যতো কিছুই বলে থাকি তা যদি রাসূল (সা) এর হাদীসের বিপরীত হয় তাহলে রাসূল (সা) এর কথাই আমার কথা।
৪. ইমাম আহমদ (র) বলেছেন: ইমাম আওযাঈ এর অভিমত, ইমাম মালিক এর অভিমত এবং ইমাম আবু হানিফার অভিমত সবই আমার কাছে অভিমত হিসাবে সমান অর্থাৎ একটাও শরীয়তের দলীল হতে পারে না। সাহাবীদের কথা শরীয়তের দলীল হবে।
ইমাম আহমদ (রা) আরও বলেছেন: যে ব্যক্তি রাসূল (সা) এর হাদীসকে প্রত্যাখ্যান করে সে ধ্বংসের মুখে দাঁড়িয়ে আছে।
সন্মানিত ইমামগণের ইমামগণের বক্তব্য থেকে পরিষ্কার বুঝা যায় যে, তাঁদের ভুল ইজতেহাদ এবং দুর্বল দলিলের বিপরীতে সহীহ হাদীস পাওয়া গেলে তাঁদের কথা বর্জন করে সহীহ হাদীস অনুযায়ী আমল করতে হবে।
মাযহাব মূলত: একটাই
মাননীয় ইমামগণের বক্তব্য থেকে এ কথাও ফুটে উঠেছে যে, চার ইমামের প্রকৃত মাযহাব মূলত: একটাই। আর তা হলো, পবিত্র কুরআন এবং সহীহ হাদীস অনুসরণ করা। এটাই রাসূল (সা) ও সাহবয়ে কেরামের মাযহাব। এই মাযহাবের নাম হলো ইসলাম আর অনুসারীর নাম মুসলিম। এই মাযহাবের ইমামে আজম হলেন মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা) এই মাযহাবের প্রথম কাতারের অনুসারী হলেন সাহাবায়ে কেরাম। দ্বীতীয কাতারের অনুসারী হলেন তাবেঈগণ। আর তৃতীয় কাতারের অনুসারী তাবে তাবেঈগণ এবং মুজতাহিদ সকল ইমাম। এভাবে প্রত্যেক যুগের খাঁটি মুমিম-মুসলিমগণ এই জামাতে শরীক হয়েছেন। আমরাও এই জামাতের অনুসারী। কিয়ামত পর্যন্ত যত মানুষ দুনিয়াতে আসবে, মুক্তি পেতে হলে এই জামাতেই শরীক হতে হবে।
প্রচলিত চার মাযহাব মানা কি ফরজ?
মাযহাব আরবী শব্দ। মাযহাব অর্থ চলার পথ, ধর্মমত এবং বিশ্বাস। বিশ্ব মুসলিমের চলার পথ, ধর্মমত এবং বিশ্বাস এক-অভিন্ন। কারণ, বিশ্ব মুসলিমের আল্লাহ এক, কুরআন এক, রাসূল এক, কিবলা এক, দ্বীন এক। সুতরার মুসলিমরা চার মাযহাবের নামে চার দলে বিভক্ত হবে কেন?
আল্লাহ তায়ালা বলেছেন:
তোমরা আল্লাহর রজ্জুকে শক্তভাবে ধারণ করো এবং তোমরা দলে দলে বিভক্ত হয়ে যেও না। (সুর ইমরান- ৩:১০৩)
আল্লাহ তায়ালা আরও বলেছেন:
যারা নিজেদের ধর্মকে ভাগ ভাগ করে পৃথক পৃথক দলে বিভক্ত হয়ে পড়েছে (হে রাসূল) আপনার কোনো সম্পর্ক নেই তাদের সাথে। তাদের বিষয় আল্লাহর হাতে। তিনি তাদেরকে (এর কুফল) জানিয়ে দিবেন। (সুরা আন আম- ৬:১৫৯)
আল্লাহ তায়ালা আরও বলেছেন:
নিশ্চয় এটাই হচ্ছে আমার সরল-সোজা পথ। সুতরাং তোমরা এই পথেই চলো। আর অন্যান্য পথের অনুসরণ করো না। তা হলে সেসব পথ তোমাদেরকে তাঁর পথ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দিবে। (সূরা আন-আম – ৬:১৫৩)
মুসনাদে আহমদ ও হাকিমে সহীহ সানাদে বর্ণিত হয়েছে, ইবনে মাসউদ (রা) বলেন, রাসূল (সা) একবার আমাদের সামনে একটি সরল-সোজা দাগ টানলেন। অতঃপর বলেন, এটা আল্লাহর সরল-সোজা পথ। তারপর ঐ দাগের ডানে-বাম আরও কতগুলি দাগ দিয়ে বললেন, এগুলি অন্যান্য ভ্রান্ত পথ। এই পথগুলির প্রত্যেকটার উপর একটি করে শয়তান আছে। সে ঐ পথের দিকে মানুষকে ডাকে। অতঃপর রাসূল (সা) উল্লেখিত (সুরা আনআমের ১৫৩ নং) আয়াতখানা তিলাওয়াত করলেন।
উল্লেখিত আয়াত এবং হাসীস থেকে পরিকষ্কার বুঝা যায় যে, সিরাতে মুস্তাকিম-সোজা পথ একটাই। সকলকে এক পথেই চলতে বলা হয়েছে। দলে দলে বিভক্ত হতে নিষেধ করা হয়েছে।
চার মায়হাব রাসূল (সা) –এর সুন্নাতও নয় এবং খোলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নাতও নয়
সুন্নাত রাসূল (সা) বলেছেন, তোমারাদের মধ্যে যারা আমার পর বেঁচে থাকবে তারা (দ্বীনি বিষয়ে) বহু মতভেদ দেখতে পাবে। এমতাবস্থায় তোমাদের অপরিহার্য্য কর্তব্য হলো আমার সুন্নাত এবং সুপথ প্রাপ্ত খোলাফায়ে রাশিদীনের সুন্নাতকে আঁকড়ে ধরা। সুন্নাতকে মাড়িয়ে দাঁত দ্বারা শক্তভাবে কামড় দিয়ে ধরবে। আর সাবধান থাকবে (দ্বীনের নামে) নব আবিস্কৃত বিষয় সমূহ হতে। কারণ, প্রতিটি নব আবিস্কৃত বিষয় হল বিদআত। আর সকল প্রকার বিদআত হলো পথভ্রষ্টতা (আর সকল পথ ভ্রষ্টতার পরিণাম জাহান্নাম) – সুনানে আবু দাউদ, তিরমিজী; সানাদ সহীহ।
প্রচলিত চার মাযহাব রাসূল (সা) এর সুন্নাতও নয়, খলিফা আবুবকর, উমর, উসমান এবং আলী (রা)-এর সুন্নাতও নয়। বরং তাঁদের অনেক পরে এসব নতুন আবিষ্কার করা হয়েছে। রাসূল (সা) বলেছেন: বনি ইসরাঈল ৭২ দলে বিভক্ত হয়েছে। আর আমার উম্মত ৭৩ দলে বিভক্ত হবে। একটি ছাড়া সবই জাহান্নামে প্রবেশ করবে। জিজ্ঞাসা করা হলো ঐ নাজাত প্রাপ্তদল কারা? রাসূল (সা) বললেন, যারা ঐ পথে থাকবে যে পথে আমি ও আমার সাহাবাগণ রয়েছি। – সুনানে আবু দাউদ
উল্লেখিত হাদীস থেকে পরিষ্কার বুঝা যায় যে, মুক্তি পেতে হলে সে পথেই চলতে হবে যে পথে রাসূল (সা) এবং সাহাবীগণ ছিলেন। এবার প্রশ্ন হলো, আমরা কি সেপথে আছি, যে পথে তাঁরা ছিলেন? তাঁরা কি চার মাযহাবের নামে চার দলে বিভক্ত ছিলেন? “চার মাযহাবের যে কোন এক মাযহাব মানতেই হবে- মাযহাব মানা ফরজ”- এমন আক্বীদা-বিশ্বাস কি তাঁদের ছিল? কোরআন-হাদীসের কোনো স্থানে চার মাযহাব মানা ফরজ বা ওয়াজিব এমন কথা লেখা নেই। এমন কি, কোরআন-হাদীসের কোথাও চার ইমামের অথবা চার মাযহাবের নামটুকুও উল্লেখ নেই।
সর্বোপরি, ঈমামগণ প্রচলিত চার মাযহাব চালুও করেননি। আর তা মেনে চলা ফরজ বা ওয়াজিব এমন কথা ঘোষনাও করেননি। তাঁরা রাসূল (সা) এবং সাহাবায়ে কেরামের আলোকিত সহীহ পথের পথিক ছিলেন। তাঁদের ইন্তে-কালের বহু বছর পর প্রচলিত চার মাযহাব আবিষ্কার করা হয়েছে। সুতরাং কোনো দিক থেকেই প্রচলিত মাযহাব মানা ওয়াজিব বা ফরজ নয়।
চারশত হিজরীর পর প্রচলিত চার মাযহাব শুরু হয়েছে
সম্মানিত চার ইমাম নিজ নিজ সময়ে স্ব স্ব এলাকায় বড় আলিম হিসেবে খ্যাত ছিলেন। ফলে লোকজন তাঁদেরকে জরুরী মাসআলা-মাসাইল জিজ্ঞাসা করতো। তাঁরা ফয়সালা দিতেন। ইমামগণের ইস্তেকবালের পর তাঁদের ভক্তরা তাঁদের মতামত ও নীতি প্রচার প্রসার করেন। এমনকি গ্রন্থ আকারে প্রকাশ করতে থাকেন। এক ইমামের ভক্তরা অন্য ইমামের ভক্তদের সাথে তর্ক-বাহাস করতে থাকেন। দলাদলি-বাড়াবাড়ি চলতে থাকে। রাজনৈতিক ফায়দা লুঠতে শাসকবর্গও এতে জড়িত হয়ে পড়েন। এভাবে কালক্রমে ধীর ধীর প্রচলিত চার মাযহাবের রূপ ধারণ করেছে। উপমহাদেশের সর্বজন শ্রদ্ধেয় আলিম, আল্লামা শাহ ওয়ালী উল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহ্লভী (রা) লিখেছেন:
‘জেনে রাখ! হিজরী চতুর্থ শতাব্দীর আগের লোকেরা কোন একজন নিদিষ্ট ব্যক্তির একক মাযহাবী তাক্বলীদের উপরে ঐক্যবদ্ধ ছিলেন না’।
চার ইমামের যে কোন একজনকেই মানতে হবে। সর্ব বিষয়ে এক মাযহাবের মাসআলা মতেই চলতে হবে। অন্য কিছু মানা যাবেনা- ‘মাযহাবের এমন অন্ধ অনুসরণ হিজরী চারশত বছরের পর থেকে শুরু হয়েছে।
বর্তমানে কোরআনের সঠিক তরজমা, নির্ভরযোগ্য তাফসীর এবং হাদীসের বিশাল ভান্ডার রয়েছে। সহীহ হাদীস থেকে জঈফ ও জাল বর্ণনা পৃথক করা আছে। মাযহাবের যে সব মাসআলা পবিত্র কোরআন ও সহীহ হাদীসের সাথে মিলে তা মানতে হবে। আর যা মিলে না তা বর্জন করতে হবে। ভুল কিয়াস এবং জঈফ ও জাল দলিল ভিত্তিক যে সব মাসআলা মাযহাবে আছে তা মানা ফরজ নয়। বরং তা বর্জন করে কোনআন-হাদীস মোতাবেক আমল করা ফরজ। এটাই আমাদের মূল বক্তব্য। আর এটাই সম্মানিত চার ইমামের প্রকৃত মাযহাব। আমরা তাঁদের প্রতি কৃতজ্ঞ ও শ্রদ্ধাশীল। তাই আসুন দলে উপদলে বিভক্ত না হয়ে কুরআন এবং সহীহ হাদীসকে আকড়িয়ে ধরি।
বইটা পিডিয়েফ বাংলা ভারসান কী ভাবে ডাউনলোডকরবো
যে বইটি ডাউনলোড করতে চান সে বইটির ছবির উপর মাউস ক্লিক করুন।