মানবজাতির ইতিহাসে এমন কোনো জাতির অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া কঠিন, যাদের সামগ্রিক ইতিহাস পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে সংরক্ষণ করা হয়েছে মুসলিম জাতি ব্যতীত। ইসলাম শুধু একটি ধর্ম নয়, এটি একটি পরিপূর্ণ জীবনব্যবস্থা। আর এই জীবনব্যবস্থার প্রতিটি বাঁক, প্রতিটি ঘটনা, এমনকি এর সূচনালগ্ন থেকে বর্তমান পর্যন্ত প্রতিটি মুহূর্তের বিশদ বিবরণ অত্যন্ত যত্নের সাথে সংরক্ষিত হয়েছে। অন্যান্য জাতির ইতিহাসে যেখানে নানা সংশয়, অনুমান বা অস্পষ্টতা রয়েছে, সেখানে মুসলিম ঐতিহাসিকরা প্রতিটি ঘটনাকে এতটাই সতর্কতার সাথে লিপিবদ্ধ করেছেন যে, সন্দেহের কোনো অবকাশই রাখেননি। তারা ব্যক্তিগত মন্তব্য বা মতামত ছাড়াই নির্মোহভাবে ঘটনাপ্রবাহ তুলে ধরেছেন, যা ইতিহাসের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করেছে।
ইসলামের ইতিহাস অধ্যয়ন তাই শুধু অতীত জানা নয়, এটি আত্ম-অনুসন্ধান এবং আত্ম-সংশোধনের একটি প্রক্রিয়া। ইতিহাসকে প্রায়শই একটি জাতির “দর্পণ” (আয়না) হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। এই দর্পণে তাকিয়ে জাতি তার অতীতের সাফল্য ও ব্যর্থতা, উত্থান ও পতন, এবং ভুল ও সঠিক সিদ্ধান্তগুলো স্পষ্ট দেখতে পায়। পূর্ববর্তী জাতিসমূহের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে একটি জাতি ভবিষ্যতের জন্য বিচক্ষণ পরিকল্পনা গ্রহণ করতে পারে এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম হয়। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন: “যদি তোমরা না জানো তবে জ্ঞানীদের জিজ্ঞাসা করো।” (সূরা আম্বিয়া: ৭) এই আয়াতটি মূলত অতীতের জ্ঞান এবং ইতিহাস অধ্যয়নের গুরুত্বকেই নির্দেশ করে।
দুঃখজনক হলেও সত্য, বর্তমানে অনেক মুসলমানই তাদের সমৃদ্ধ ইতিহাস সম্পর্কে উদাসীন। অথচ এই ইতিহাসেই নিহিত আছে আমাদের পূর্বপুরুষদের ঈমান, জ্ঞান, ত্যাগ ও সংগ্রামের অনুপম দৃষ্টান্ত। এই ইতিহাস অনুধাবন করতে পারলে আমরা আমাদের শিকড়ের সাথে পুনরায় যুক্ত হতে পারব, যা আত্মিক শান্তি এবং ইসলামিক নীতিমালার প্রতি দৃঢ়ভাবে অবিচল থাকতে সহায়ক হবে।
বনী ইসরাঈলের জাতিগত শ্রেষ্ঠত্বের কথা সর্বজনবিদিত। এমনকি তারা নিজেদেরকে (আমরা আল্লাহ্র পুত্র এবং তার প্রিয়জন, নাউযুবিল্লাহ্) বলে অভিহিত করতো। কিন্তু এমন একটি জাতিই যখন নিজেদের পূর্বপুরুষদের কথা বিস্মৃত হয়ে গেলো তখন তারাও দিন দিন অধঃপতনের দিকে তলিয়ে যেতে লাগলো। এজন্যেই আল্লাহ্ তা’আলা তাদেরকে বারবার এই বলে সম্বোধন করেছেন:
“হে বনী ইসরাঈল! স্মরণ কর” … পূর্ব পুরুষদের কথা তাদেরকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন।
আক্ষেপ ও বিস্ময়ের ব্যাপার, আজ যখন বিশ্বের তাবৎ জাতি নিজেদেরকে বিশ্বদরবারে সমুন্নত করার প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত, তখনও সর্বাধিক গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস-ঐতিহ্যের অধিকারী মুসলমানগণ নিজেদের ইতিহাস সম্পর্কে উদাসীন ও নির্বিকার। পৈতৃক সূত্রে আমরা মুসলিম হওয়ায় ইসলামের ইতিহাস আমাদের আমাদের অধিকাংশের কাছে অবহেলার বিষয় । মুসলিম প্রধান দেশ হলেও প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থায় তা জানার সুযোগ সিমিত । বর্তমান মুসলিমদের অধিকাংশ আমরা জানি না কেন আমরা মুসলিম। এবং ইসলামকে মেনে চলার ব্যপরের আমরা নিষ্ঠাবান নই। শান্তি হারিয়ে বিভিন্ন কিছুতে আমরা শান্তির সন্ধান করছি। অথচ খুঁজে দেখিনা ইসলামকে মানার মধ্যেই শান্তি নিহিত রয়েছে। কিন্তু তা জানতে হলে আমাদের ইসলামের ইতিহাসকে জানা জরুরি। ইতিহাসক একটা জাতির দিক-দর্শন যন্ত্রের মতও কাজ করে। আসুন নিচের কিছু নির্ভরযোগ্য ও জনপ্রিয় বই থেকে আমরা জেনে নেই, কেন আমাদের পূর্বসুরিরা আমাদের চেয়ে সুন্দর, পরিচ্ছন্ন, শান্তিময় এবং সাফল্য পেয়েছিলেন ।
ইসলামের ইতিহাস
ঐতিহাসিক মাওলানা আকবর শাহ খান নজিবাবাদী তাঁর গ্রন্থের প্রথমদিকে ইতিহাসের সংজ্ঞা, ইতিহাসপাঠের প্রয়োজনীয়তা, ইসলামের ইতিহাস ও সাধারণ ইতিহাস সংক্রান্ত পর্যালোচনা করেছেন। এরপর আরবদেশ, আরবদেশের অবস্থান, প্রকৃতি ও এর অধিবাসী সম্পর্কিত আলোচনা করা হয়েছে। পরবর্তী পর্যায়ে হযরত মুহাম্মদ (সা)-এর জন্ম হতে ওফাত পর্যন্ত যাবতীয় ঘটনা সবিস্তারে বিধৃত হয়েছে। গ্রন্থখানির পরিসমাপ্তি ঘটেছে খুলাফায়ে রাশেদার আমলে ইসলাম প্রচার, দেশ বিজয় ও রাজ্য শাসন ইত্যাদি বিষয়ের নিখুঁত, নির্ভুল ও হৃদয়গ্রাহী উপস্থাপনার মাধ্যমে।
বইটির প্রকাশনার তথ্য
বইঃ ইসলামের ইতিহাস
লেখকঃ মাওলানা আকবর শাহ খান নজিবাবাদী
প্রকাশকঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ
ISBN-984-06-1229-8 (প্রথম খন্ড)
ইসলামিক ইতিহাস অধ্যয়নের ক্ষেত্রে আরেকটি সুবিশাল ও প্রামাণ্য গ্রন্থ যা মুসলিম উম্মাহর কাছে এক অনবদ্য দলিল হিসেবে সমাদৃত, তা হলো ইমাম ইবনে কাসীর (রহ.)-এর সুবিখ্যাত ‘আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া’ (আরবি: البداية والنهاية), যার অর্থ ‘আদি ও অন্ত’ বা ‘শুরু ও শেষ’। ইমাম ইবনে কাসীর (রহ.) চতুর্দশ শতাব্দীর একজন প্রখ্যাত মুহাদ্দিস, মুফাসসির ও ঐতিহাসিক ছিলেন।
‘আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া’ শুধু একটি ইতিহাস গ্রন্থ নয়, এটি মুসলিম বিশ্বের জন্য এক বিস্তৃত জ্ঞানকোষ। এতে সৃষ্টির আদি থেকে শুরু করে আরশ, কুরসি, আকাশ, পৃথিবী, ফেরেশতা, জিন এবং আদম (আঃ)-এর সৃষ্টি—সকল কিছুর বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে। এরপর আদম (আঃ) ও অন্যান্য নবীদের (আঃ) জীবন কাহিনী, যেমন নূহ (আঃ), ইব্রাহিম (আঃ), মূসা (আঃ), ঈসা (আঃ)-এর ঘটনাবলী বর্ণিত হয়েছে। গ্রন্থের একটি বিশাল অংশ জুড়ে রয়েছে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর সীরাত মুবারক (জীবনী) এবং তাঁর জীবনের প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এরপর খোলাফায়ে রাশেদীন এবং লেখকের সময়কাল (৭৬৮ হিজরী) পর্যন্ত সকল গুরুত্বপূর্ণ ইসলামিক ঘটনা, বিভিন্ন খিলাফতের উত্থান-পতন, সাম্রাজ্যের বিস্তার, এবং উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিত্বদের বিবরণ বিশদভাবে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে।
এর বিশেষত্ব হলো, ইমাম ইবনে কাসীর (রহ.) প্রতিটি তথ্যের জন্য কুরআন, সহীহ হাদীস এবং নির্ভরযোগ্য ঐতিহাসিক বর্ণনার উপর নির্ভর করেছেন। তিনি সনদ (বর্ণনা পরম্পরা) উল্লেখ করে ঘটনার প্রামাণিকতা নিশ্চিত করেছেন, যা এটিকে অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য ও প্রামাণিক করে তুলেছে। গ্রন্থের শেষ অংশে কিয়ামতের (বড় ও ছোট) নিদর্শনসমূহ, ফিতনা (বিপর্যয়), যুদ্ধবিগ্রহ, পুনরুত্থান, কিয়ামতের ভয়াবহতা এবং জান্নাত ও জাহান্নামের বর্ণনা সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
ইসলামের ইতিহাস : আদি-অন্ত
“আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া” (আরবি: البداية والنهاية), যার অর্থ “আদি ও অন্ত” বা “শুরু ও শেষ”, ইমাম ইবনে কাসীর (মৃত্যু ১৩৭৩ খ্রিস্টাব্দ) রচিত ইসলামিক ইতিহাসের একটি বিশাল এবং গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ। এটি ইসলামিক ইতিহাসের অন্যতম ব্যাপক ও প্রামাণ্য উৎস হিসেবে বিবেচিত।
এখানে এর মূল দিকগুলির একটি সারসংক্ষেপ দেওয়া হলো:
ব্যাপ্তি ও কাঠামো:
বইটি সৃষ্টির শুরু থেকে লেখকের সময় পর্যন্ত বিস্তৃত, এমনকি কিয়ামত পর্যন্ত ভবিষ্যতের ঘটনা সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণীও এতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এটি সাধারণত কয়েকটি প্রধান অংশে বিভক্ত:
- ১ম অংশ: সৃষ্টির সূচনা: এই অংশে মহাবিশ্বের সৃষ্টি নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে, যার মধ্যে আরশ (সিংহাসন), কুরসি (পাদদেশ), আকাশ ও পৃথিবী, ফেরেশতা, জিন এবং আদম (আঃ)-এর সৃষ্টি অন্তর্ভুক্ত।
- ২য় অংশ: নবীদের কাহিনী: এই অংশটি আদম (আঃ) থেকে শুরু করে হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) পর্যন্ত বিভিন্ন নবীর গল্পের মাধ্যমে মানবজাতির ইতিহাসকে তুলে ধরে। এতে বনী ইসরাঈল এবং প্রাক-ইসলামী যুগের (জাহিলিয়াত) বিবরণও রয়েছে।
- ৩য় অংশ: হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর জীবন ও প্রাথমিক ইসলামিক ইতিহাস: এই অংশটি হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর জীবনী এবং ইসলামের প্রাথমিক সময়ের ঘটনাগুলির উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে, যার মধ্যে খোলাফায়ে রাশেদীনের শাসনকাল অন্তর্ভুক্ত।
- ৪র্থ অংশ: নবীর পরবর্তী ইতিহাস: এই অংশটি হযরত মুহাম্মদ (সাঃ)-এর ওফাতের পর থেকে লেখকের জীবনকাল (৭৬৮ হিজরী) পর্যন্ত ঐতিহাসিক ঘটনাগুলির বিশদ বিবরণ দেয়। এতে বিভিন্ন খিলাফত, রাজবংশের উত্থান-পতন, গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব, এবং সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে।
- ৫ম অংশ: কিয়ামতের নিদর্শন ও পরকাল: এই শেষ অংশটি কিয়ামতের (ছোট ও বড়) নিদর্শনসমূহ, ফিতনা (বিপর্যয়), যুদ্ধবিগ্রহ, পুনরুত্থান, কিয়ামতের ভয়াবহতা এবং জান্নাত (বেহেশত) ও জাহান্নাম (দোযখ)-এর বর্ণনা নিয়ে আলোচনা করে।
মূল বৈশিষ্ট্য ও গুরুত্ব:
- ব্যাপক ঐতিহাসিক বিবরণ: ইবনে কাসীর অসংখ্য সূত্র থেকে ঐতিহাসিক বর্ণনাগুলিকে সতর্কতার সাথে সংকলন করেছেন।
- প্রাথমিক উৎসের উপর নির্ভরতা: লেখক কুরআন, হাদীস (নবুওয়াতী ঐতিহ্য), সাহাবায়ে কেরাম (নবীর সহচর), তাবেঈন (উত্তরসূরি) এবং অন্যান্য শ্রদ্ধেয় আলেম ও ঐতিহাসিকদের বর্ণনা থেকে ব্যাপকভাবে তথ্য সংগ্রহ করেছেন। প্রামাণ্য উৎসের উপর এই জোর এটিকে একটি অত্যন্ত সম্মানিত রেফারেন্স গ্রন্থ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
- বিশ্লেষণাত্মক পদ্ধতি: যদিও এটি মূলত একটি ঐতিহাসিক কালপঞ্জি, ইবনে কাসীর প্রায়শই বিশ্লেষণ ও ভাষ্য প্রদান করেন, ঘটনাগুলিকে ইসলামিক শিক্ষা ও নীতির সাথে সংযুক্ত করেন।
- নির্ভরযোগ্যতা: এর কঠোর পদ্ধতি এবং বর্ণনাগুলির শক্তিশালী শৃঙ্খলের উপর নির্ভরতার কারণে, “আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া” ইসলামিক ইতিহাস অধ্যয়নের জন্য একটি মৌলিক এবং নির্ভরযোগ্য উৎস হিসাবে বিবেচিত হয়।
- প্রভাব: বইটি ইসলামিক পাণ্ডিত্যপূর্ণ কাজে গভীর প্রভাব ফেলেছে এবং বিশ্বজুড়ে মুসলিমদের দ্বারা ব্যাপকভাবে অধ্যয়ন ও উল্লেখ করা হয়। এটি বাংলা সহ অসংখ্য ভাষায় অনূদিত হয়েছে (প্রায়শই ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ কর্তৃক “ইসলামের ইতিহাস: আদি-অন্ত” নামে)।
সংক্ষেপে, “আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া” সৃষ্টির উষা থেকে চূড়ান্ত সমাপ্তি পর্যন্ত অস্তিত্বের একটি বিস্তৃত চিত্র তুলে ধরে, যা সম্পূর্ণভাবে ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে, ধর্মগ্রন্থ এবং ঐতিহ্যগত উৎসের উপর ভিত্তি করে রচিত।
বইটির প্রকাশনার তথ্য
বইঃ আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া
লেখকঃ আবুল ফিদা হাফিজ ইব্ন কাসীর আদ-দামেশ্কী (র)
প্রকাশকঃ ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ
ISBN-984-06-0565-8 (প্রথম খন্ড)
ইতিহাসের পাঠ: বর্তমান ও ভবিষ্যতের দিশা
মুসলিম ঐতিহাসিকদের নিরপেক্ষতা ও ঘটনার নির্ভুল উপস্থাপনার যে প্রচেষ্টা, ‘আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া’ তারই এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এই ধরনের বিস্তারিত ও প্রামাণ্য ঐতিহাসিক গ্রন্থ অধ্যয়নের মাধ্যমে মুসলিম উম্মাহ তাদের গৌরবোজ্জ্বল অতীত, উত্থান-পতনের কারণ এবং ভবিষ্যৎ পথের দিশা খুঁজে পেতে পারে, যা বর্তমান অস্থির সময়ে অত্যন্ত জরুরি। ইতিহাস কেবল শুষ্ক ঘটনাবলির সমষ্টি নয়, এটি জীবন ও জাগরণের এক প্রবহমান ধারা, যা আমাদের পরিচয়কে সুদৃঢ় করে এবং আগামী দিনের জন্য সঠিক পথ প্রদর্শনে সহায়তা করে।