মৃত্যুর পর শুরু হয় মানুষের প্রকৃত জীবনের যাত্রা – তা হলো কবরের জীবন। ইসলামী দৃষ্টিকোণ থেকে কবর একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়, যা দুনিয়া ও আখিরাতের মাঝে একটি মধ্যবর্তী অবস্থা (বরযাখ)।
কবর জীবনের নাম: বরযাখ
وَمِن وَرَائِهِم بَرْزَخٌ إِلَىٰ يَوْمِ يُبْعَثُونَ
অর্থ: “তাদের সামনে রয়েছে একটি বরযাখ (আড়াল), পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত।”
(সূরা মু’মিনুন: ১০০)
বরযাখ হল এমন এক অন্তরাল, যেখানে মানুষ মৃত্যুর পর থেকে কিয়ামত পর্যন্ত অবস্থান করবে।
❓মুনকার ও নাকীরের প্রশ্ন
মৃত্যুর পর কবরের মধ্যে দুইজন ফেরেশতা – মুনকার ও নাকীর – মৃত ব্যক্তিকে তিনটি প্রশ্ন করবে:
- তোমার প্রভু কে?
- তোমার দ্বীন কী?
- এই ব্যক্তি কে (রাসূল ﷺ)?
যে সঠিকভাবে উত্তর দেবে, তার কবর প্রশস্ত হবে; আর যে ব্যর্থ হবে, তার কবর হবে গর্তের মতো সংকীর্ণ ও শাস্তির স্থান।
🌸 মুমিনদের কবরের অবস্থা
- কবর প্রশস্ত করে দেওয়া হবে
- জান্নাতের জানালা খোলা হবে
- সুগন্ধ ও শান্তি থাকবে
রাসূল (সা.) বলেন, “মুমিনের কবরকে জান্নাতের বাগানের মতো করে দেওয়া হবে।” (বুখারি)
🔥 কাফের ও ফাসিকদের কবরের শাস্তি
- কবর চাপা ও সংকীর্ণ হবে
- আগুন দিয়ে পোড়ানো হবে
- ময়লা, সাপ-বিচ্ছু দিয়ে শাস্তি হবে
النَّارُ يُعْرَضُونَ عَلَيْهَا غُدُوًّا وَعَشِيًّا
অর্থ: “সকালে ও সন্ধ্যায় তাদের আগুনে প্রদর্শন করা হবে।”
(সূরা গাফির: ৪৬)
🛡️ কবরের আযাব থেকে বাঁচার উপায়
- সুরা মুলক (আল-মুলক) প্রতিরাতে পড়া
- নিয়মিত ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়া
- দোয়া করা: “আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজু বিকা মিন ‘আযাবিল কবর…”
- অপবিত্রতা থেকে বেঁচে থাকা (যেমনঃ পেশাবের ছিটা)
- বেশি বেশি ইস্তিগফার
🤲 দোয়া: কবরের আযাব থেকে মুক্তির জন্য
اللّهُمَّ إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنْ عَذَابِ الْقَبْرِ
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজু বিকা মিন ‘আযাবিল কবর।
অর্থ: “হে আল্লাহ! আমি আপনার কাছে কবরের আযাব থেকে আশ্রয় চাই।”
কবরের জীবন সত্য। এটি হবে শান্তিময় জান্নাতের বাগান বা কঠিন জাহান্নামের গর্ত। আমাদের উচিত এখনই আমল করা ও আল্লাহর পথে ফিরে আসা, যেন আমরা কবরের শান্তি লাভ করি।